সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৩

আমাদের কথা কে ভাবে??

আলসেমী করে ঘুম থেকে দেরী করে উঠা অতঃপর দাতঁ ব্রাশ করা, গোসল করা, মায়ের মিষ্টি-মধুর বকুনী
( সেই একি বকুনী ' আরো আধা-ঘন্টা আগে উঠলে কি হয়? ভালো করে নাস্তা পর্যন্ত করিস না। কত করে বলি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমা, আমি আর পারিনা বাপু এইবার বিয়ে করে বউ নিয়ে আয় ইত্যাদি'' )
খেতে খেতে মায়ের মন রাখতে কোনো রকমে নাস্তা করা, প্রতিদিনের মতন সেই বাস ধরার জন্য স্ট্রাগল করা ধাক্কা-ধাক্কি করে পাশের প্রতিদ্বন্দী কে হারিয়ে বাসে যাওয়া। কিন্তু আজকের  চিত্র একটু ভিন্ন, আজ থেকে শুরু হয়েছে বিএনপি'র  ডাকা টানা ৪৮ ঘন্টা হরতাল । বাসা থেকে বের হয়েই পরলাম এক বিড়ম্বনায়, আশে পাশে কোনো রিকশা নাই। অগ্যতা হেটেই মেইন রোডে পৌছে গেলাম, আশা ছিলো আজ হয়তো কোনো গাড়ি-বাস পাবো। কিন্তু কিসের কি ! গত হরতালগুলোর  মত সেই একি চিত্র বানের পানির মতন রিকশার স্রোত যাচ্ছে। গাড়ি প্রায় নেই বললেই চলে। যাও আসে অনেক্ষন পরপর তাও উঠার যোগার নেই। অতএব, আগের হরতালের দিনগুলোর  মতই ৫ টাকার বাস ভাড়ার জায়গায় ৪০টাকা রিক্সা ভাড়া গুনতে হয় ।


এখন কথা হলো কার পাপের প্রায়শ্চিত্র আমার করতে হচ্ছে? এ মাসে তো আমি বেতন বেশী পাবোনা, উলটো এই হরতালের কারনে ব্যবসা-বানিজ্যের অবস্থা চরম খারাপ, আমার অর্ডার কমে গেছে। ফলাফল কমিশন কমে গেছে। কিন্তু খরচ? সেটা কি কমেছে?? তার উপর যদি দৈনন্দিন যাতায়াত খরচ বেড়ে যায় তাহলে আমার মত যারা আছে তাদের কি হবে, কেউ কি ভেবে দেখেছে??

আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক নই। প্রথমবার ভোটার হয়ে ২০০১ এ বি এন পি কে ভোট দেই কিন্তু বি এন পি আমার (শুধু আমার কেনো সবার ) প্রত্যাশা পুরনে চরভাবে ব্যর্থ হয় ফলাফল পরবর্তী নির্বাচনে তাদের কল্পনার অতীত ভরাডুবি। তারপর অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ২০০৮ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমি আশাবাদী মানুষ তাই অনেক আশায় বুক বেঁধে এবার বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ কে ভোট দেই। ফলাফল? শুন্য । তারাও দেখিয়ে দিচ্ছে ক্ষমতার লিপ্সা আর দুর্নীতিতে তারাও বি এন পি থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই।

দিন যায় ক্ষমতার ঘুর্নায়মান গদিতে কুশীলব বদলায়, তাদের পকেট ভারী হয়। যা বদলায় না তাহলো আমার সোনার বাংলার ভাগ্য। ভাগ্য বদলায় না আমার মত লাখো-কোটি খেটে খাওয়া মানুষের। আমার মত চরম আশাবাদী মানুষ ও আজ নিরাশ এই দু'টি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড নিয়ে।

আমার মত সাধারন মানুষ হয়তো কিছুই করতে পারবেনা তবু আমার অবস্থান থেকে আমি যা করতে পারি তাহলো সামনের জাতীয় নির্বাচনে, নির্বাচন কমিশন যদি ''না ভোট'' এর ব্যবস্থা রাখে তাহলে ''না ভোট'' দিবো, আর যদি এর ব্যবস্থা না রাখে তাহলে ভোট দিবোনা। এটাই হবে আমার প্রতিবাদ! অনেকেই হয়তো বলবেন আপনার মত একজন মানুষের ১টি ভোট না পেলে আমাদের দলের কিছু যায় আসেনা! আমি আপনাদের এ কথা মানি। কিন্তু আমি আমার বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকতে চাই। কাউকেই যোগ্য মনে করছিনা তাই ''না ভোট'' দিবো। নতুবা দিবোনা।